রোজার হাদিস

 হাদিস- ১৮৯১

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ أَبِي سُهَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ أَنَّ أَعْرَابِيًّا جَاءَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثَائِرَ الرَّأْسِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخْبِرْنِي مَاذَا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ مِنْ الصَّلاَةِ فَقَالَ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسَ إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ شَيْئًا فَقَالَ أَخْبِرْنِي مَا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ مِنْ الصِّيَامِ فَقَالَ شَهْرَ رَمَضَانَ إِلاَّ أَنْ تَطَّوَّعَ شَيْئًا فَقَالَ أَخْبِرْنِي بِمَا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ مِنْ الزَّكَاةِ فَقَالَ فَأَخْبَرَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم شَرَائِعَ الإِسْلاَمِ قَالَ وَالَّذِي أَكْرَمَكَ لاَ أَتَطَوَّعُ شَيْئًا وَلاَ أَنْقُصُ مِمَّا فَرَضَ اللهُ عَلَيَّ شَيْئًا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَفْلَحَ إِنْ صَدَقَ أَوْ دَخَلَ الْجَنَّةَ إِنْ صَدَقَ

তালহা ইব্‌নু ‘উবায়দুল্লাহ (রাঃ) বর্ণিত এলোমেলো চুলসহ একজন গ্রাম্য আরব রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন। অতঃপর বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাকে বলুন, আল্লাহ্‌ তা’আলা আমার উপর কত সালাত ফারয্‌ করেছেন? তিনি বললেনঃ পাঁচ (ওয়াক্ত) সালাত; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় কর তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ্‌ আমার উপর কত সিয়াম আল্লাহ তা’আলা ফারয্‌ করেছেন? আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ রমযান মাসের সওম; তবে তুমি যদি কিছু নফল সিয়াম আদায় কর তা হল স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ আমার উপর কী পরিমাণ যাকাত ফরয করেছেন? রাবী বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন। এরপর তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আল্লাহ আমার উপর যা ফরয করেছেন, আমি এর মাঝে কিছু বাড়াব না এবং কমাবও না। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল।
হাদিস- ১৮৯২

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ صَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا فُرِضَ رَمَضَانُ تُرِكَ وَكَانَ عَبْدُ اللهِ لاَ يَصُومُهُ إِلاَّ أَنْ يُوَافِقَ صَوْمَهُ

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আশূরার দিন সিয়াম পালন করেছেন এবং এ সিয়ামের জন্য আদেশও করেছেন। পরে যখন রমযানের সিয়াম ফরয হল তখন তা ছেড়ে দেওয়া হয়। ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) এ সিয়াম পালন করতেন না, তবে মাসের যে দিনগুলোতে সাধারণত সিয়াম পালন করতেন তার সাথে মিল হলে করতেন।
হাদিস- ১৮৯৪

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الصِّيَامُ جُنَّةٌ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَجْهَلْ وَإِنْ امْرُؤٌ قَاتَلَهُ أَوْ شَاتَمَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي صَائِمٌ مَرَّتَيْنِ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ تَعَالَى مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ يَتْرُكُ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ وَشَهْوَتَهُ مِنْ أَجْلِي الصِّيَامُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মূর্খের মত কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুই বার বলে, আমি সওম পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মিসকের সুগন্ধির চাইতেও উৎকৃষ্ট, সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। সিয়াম আমারই জন্য। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুণ।
হাদিস- ১৮৯৫

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا جَامِعٌ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ قَالَ عُمَرُ مَنْ يَحْفَظُ حَدِيثًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْفِتْنَةِ قَالَ حُذَيْفَةُ أَنَا سَمِعْتُهُ يَقُولُ فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلاَةُ وَالصِّيَامُ وَالصَّدَقَةُ قَالَ لَيْسَ أَسْأَلُ عَنْ ذِهِ إِنَّمَا أَسْأَلُ عَنْ الَّتِي تَمُوجُ كَمَا يَمُوجُ الْبَحْرُ قَالَ وَإِنَّ دُونَ ذَلِكَ بَابًا مُغْلَقًا قَالَ فَيُفْتَحُ أَوْ يُكْسَرُ قَالَ يُكْسَرُ قَالَ ذَاكَ أَجْدَرُ أَنْ لاَ يُغْلَقَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ فَقُلْنَا لِمَسْرُوقٍ سَلْهُ أَكَانَ عُمَرُ يَعْلَمُ مَنْ الْبَابُ فَسَأَلَهُ فَقَالَ نَعَمْ كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ اللَّيْلَةَ

হুযাইফাহ (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, একদা ‘উমার (রাঃ) বললেন, ফিতনা সম্পর্কিত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর হাদীসটি কার মুখস্ত আছে? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছি যে, পরিবার, ধন-সম্পদ এবং প্রতিবেশীই মানুষের জন্য ফিতনা। সালাত, সিয়াম এবং সদকা এর কাফ্‌ফারা হয়ে যায়। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ ফিতনা সম্পর্কে আমি প্রশ্ন করছি না, আমি তো প্রশ্ন করেছি ঐ ফিতনা সম্পর্কে, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের ন্যায় আন্দোলিত হতে থাকবে। হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন এ ফিতনার সামনে বন্ধ দরজা আছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ দরজা কি খুলে যাবে, না ভেঙ্গে যাবে? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, ভেঙ্গে যাবে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তাহলে তো তা কিয়ামত পর্যন্ত বন্ধ হবে না। আমরা মাসরূক (রহঃ)-কে বললাম, হুযাইফাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করুন, ’উমার (রাঃ) কি জানতেন, কে সেই দরজা? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি এরূপ জানতেন যেরূপ কালকের দিনের পূর্বে আজকের রাত।
হাদিস- ১৮৯৬

حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ عَنْ سَهْلٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ يُقَالُ أَيْنَ الصَّائِمُونَ فَيَقُومُونَ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ

সাহল (রাঃ) বর্ণিত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জান্নাতের রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, সওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।
হাদিস- ১৮৯৭

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ قَالَ حَدَّثَنِي مَعْنٌ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللهِ نُودِيَ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا خَيْرٌ فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلاَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الْجِهَادِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا عَلَى مَنْ دُعِيَ مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ مِنْ ضَرُورَةٍ فَهَلْ يُدْعَى أَحَدٌ مِنْ تِلْكَ الأَبْوَابِ كُلِّهَا قَالَ نَعَمْ وَأَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে কেউ আল্লাহ্‌র পথে জোড়া জোড়া ব্যয় করবে তাকে জান্নাতের দরজাসমূহ হতে ডাকা হবে, হে আল্লাহ্‌র বান্দা! এটাই উত্তম। অতএব যে সালাত আদায়কারী, তাকে সলাতের দরজা হতে ডাকা হবে। যে মুজাহিদ, তাকে জিহাদের দরজা হতে ডাকা হবে। যে সিয়াম পালনকারী, তাকে রাইয়্যান দরজা হতে ডাকা হবে। যে সদাকাহ দানকারী, তাকে সদাকাহ্‌র দরজা হতে ডাকা হবে। এরপর আবূ বকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক, সকল দরজা হতে কাউকে ডাকার কোন প্রয়োজন নেই, তবে কি কাউকে সব দরজা হতে ডাকা হবে? আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ। আমি আশা করি তুমি তাদের মধ্যে হবে।
হাদিস- ১৮৯৮

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ أَبِي سُهَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا جَاءَ رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন রমযান আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
হাদিস- ১৮৯৯

حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي أَنَسٍ مَوْلَى التَّيْمِيِّينَ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَمَضَانَ فُتِّحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتْ الشَّيَاطِينُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলতেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ রমযান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানগুলোকে শিকলবন্দী করে দেয়া হয়।
হাদিস- ১৯০০

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ الله صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَصُومُوا وَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَأَفْطِرُوا فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاقْدُرُوا لَهُ وَقَالَ غَيْرُهُ عَنْ اللَّيْثِ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ وَيُونُسُ لِهِلاَلِ رَمَضَانَ

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা তা (চাঁদ) দেখবে তখন সওম রাখবে, আবার যখন তা দেখবে তখন ইফ্‌তার করবে। আর যদি আকাশ মেঘলা থাকে তবে সময় হিসাব করে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে। ইয়াহইয়া ইব্‌নু বুকায়ার (রহঃ) ব্যতীত অন্যরা লায়স (রহঃ) হতে ‘উকায়ল এবং ইউনুস (রহঃ) সুত্রে বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কথাটি বলেছেন রমযানের চাঁদ সম্পর্কে।
হাদিস- ১৯০১

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদ্‌রে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদাত করে, তার পিছনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে।
হাদিস- ১৯০২

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ بِالْخَيْرِ وَكَانَ أَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ وَكَانَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَم يَلْقَاهُ كُلَّ لَيْلَةٍ فِي رَمَضَانَ حَتَّى يَنْسَلِخَ يَعْرِضُ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْقُرْآنَ فَإِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَم كَانَ أَجْوَدَ بِالْخَيْرِ مِنْ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ

ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ধন-সম্পদ ব্যয় করার ব্যাপারে সকলের চেয়ে দানশীল ছিলেন। রমযানে জিবরাঈল (আঃ) যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতেন, তখন তিনি আরো অধিক দান করতেন। রমযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি রাতেই জিবরাঈল (আঃ) তাঁর সঙ্গে একবার সাক্ষাত করতেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে কুরাআন শোনাতেন। জিবরাঈল যখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতেন তখন তিনি রহমতসহ প্রেরিত বায়ুর চেয়ে অধিক ধন-সম্পদ দান করতেন।
হাদিস- ১৯০৩

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ فَلَيْسَ للهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহ্‌র কোন প্রয়োজন নেই।
হাদিস- ১৯০৪

حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ عَنْ أَبِي صَالِحٍ الزَّيَّاتِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اللهُ كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ إِنِّي امْرُؤٌ صَائِمٌ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ الْمِسْكِ لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন, সওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য। তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢাল স্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাঁকে গালি দেয় অথবা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন সায়িম। যার কবজায় মুহাম্মাদের প্রাণ, তাঁর শপথ! অবশ্যই সায়িমের মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র নিকট মিস্‌কের গন্ধের চাইতেও সুগন্ধি। সায়িমের জন্য রয়েছে দু’টি খুশী যা তাঁকে খুশী করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে তাঁর রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সওমের বিনিময়ে আনন্দিত হবে।
হাদিস- ১৯০৫

حَدَّثَنَا عَبْدَانُ عَنْ أَبِي حَمْزَةَ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ بَيْنَا أَنَا أَمْشِي مَعَ عَبْدِ اللهِ فَقَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنْ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ

‘আলকামাহ (রহঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর সঙ্গে চলতে ছিলাম, তখন তিনি বললেন, আমরা আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে ছিলাম, তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। সওম তার প্রবৃত্তিকে দমন করে। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, ------ শব্দের অর্থ বিবাহ।
হাদিস- ১৯০৬

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ رَمَضَانَ فَقَالَ لاَ تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْا الْهِلاَلَ وَلاَ تُفْطِرُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَاقْدُرُوا لَهُ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বর্ণিত আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমযানের কথা আলোচনা করে বললেনঃ চাঁদ না দেখে তোমরা সওম পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ইফ্‌তার করবে না। যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে তার সময় (ত্রিশ দিন) পরিমাণ পূর্ণ করবে।
হাদিস- ১৯০৭

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ لَيْلَةً فَلاَ تَصُومُوا حَتَّى تَرَوْهُ فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا الْعِدَّةَ ثَلاَثِينَ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বর্ণিত আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাস ঊনত্রিশ রাত বিশিষ্ট হয়। তাই তোমরা চাঁদ না দেখে সওম শুরু করবে না। যদি আকাশ মেঘাবৃত থাকে তাহলে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।
হাদিস- ১৯০৮

حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ جَبَلَةَ بْنِ سُحَيْمٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الشَّهْرُ هَكَذَا وَهَكَذَا وَخَنَسَ الإِبْهَامَ فِي الثَّالِثَةِ

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (দু’হাতের আঙ্গুলি তুলে ইঙ্গিত করে) বলেনঃ মাস এত এত দিনে হয় এবং তৃতীয় বার বৃদ্ধাঙ্গুলিটি বন্ধ করে নিলেন।
হাদিস- ১৯০৯

حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ زِيَادٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْ قَالَ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صُومُوا لِرُؤْيَتِهِ وَأَفْطِرُوا لِرُؤْيَتِهِ فَإِنْ غُبِّيَ عَلَيْكُمْ فَأَكْمِلُوا عِدَّةَ شَعْبَانَ ثَلاَثِينَ

‘আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অথবা বলেন, আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম আরম্ভ করবে এবং চাঁদ দেখে ইফ্‌তার করবে। আকাশ যদি মেঘে ঢাকা থাকে তাহলে শা’বানের গণনা ত্রিশ দিন পুরা করবে।
হাদিস- ১৯১০

حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ صَيْفِيٍّ عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم آلَى مِنْ نِسَائِهِ شَهْرًا فَلَمَّا مَضَى تِسْعَةٌ وَعِشْرُونَ يَوْمًا غَدَا أَوْ رَاحَ فَقِيلَ لَهُ إِنَّكَ حَلَفْتَ أَنْ لاَ تَدْخُلَ شَهْرًا فَقَالَ إِنَّ الشَّهْرَ يَكُونُ تِسْعَةً وَعِشْرِينَ يَوْمًا

উম্মু সালামাহ (রাঃ) বর্ণিত তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাসের মত তাঁর স্ত্রীদের সাথে ঈলা করলেন। ঊনত্রিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর সকালে বা সন্ধ্যায় তিনি তাঁদের নিকট গমন করলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি তো এক মাস পর্যন্ত না আসার শপথ করেছিলেন? তিনি বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়ে থাকে।

Post a Comment

نموذج الاتصال